স্টাফ রিপোর্টার::
নিখোঁজের প্রায় ৫৭ ঘণ্টা পর জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য, সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের সহ-সভাপতি ও শান্তিগঞ্জের বড়মোহা দারুল উলুম ইসলামিয়া আরবিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরীর (৫২) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দিরাই উপজেলার শরিফপুর বাট্টা এলাকার শ্যামনগর নদীতে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহতের ভাতিজা আবু সুফিয়ান এবং জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক তৈয়বুর রহমান চৌধুরী।
মাওলানা মুশতাক আহমদ শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের গাজীনগর গ্রামের আব্দুল মন্নানের ছেলে। তিনি সুনামগঞ্জ-৩ (শান্তিগঞ্জ—জগন্নাথপুর) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হাম্মাদ আহমদ গাজীনগরীর চাচাতো ভাই।
গত মঙ্গলবার রাত থেকে মাওলানা মুশতাক আহমদ নিখোঁজ ছিলেন। তার স্ত্রী রুবি বেগম বুধবার বিকেলে শান্তিগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর আগে মঙ্গলবার রাত ১০টা ৫১ মিনিটে তিনি স্ত্রীকে ফোনে জানান, “আমি সুনামগঞ্জে এসেছিলাম, আসছি।” কিছুক্ষণ পর আবার ফোন দিয়ে বলেন, “আমি এক ঘণ্টার মধ্যে আসব।” সেটিই ছিল তার শেষ কথা।
পুলিশ জানিয়েছিল, ওই রাতেই রাত ১১টা ২০ মিনিটে মদনপুর-দিরাই সড়ক মোড়ের একটি সিসিটিভি ফুটেজে তাকে দেখা গেছে। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ, তাকে প্রথমে গুম করে পরে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। নিহতের ফুফাতো ভাই জুনেদ আহমেদ বলেন, “আমাদের ধারণা, পরিকল্পিতভাবে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ার, শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বর ও সিলেট–সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন জমিয়তের নেতাকর্মী ও নিহতের স্বজনরা। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুশতাক আহমদের সন্ধান না পাওয়া গেলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “স্থানীয়দের খবর পেয়ে পুলিশ নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।”