বিশেষ প্রতিনিধি ::

‎

‎

‎সুনামগঞ্জ সদর উপজেলাধীন কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার পর দেখা যাচ্ছে  কমিটিতে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ এবং জাতীয় পার্টির সুবিধাবাদী কর্মীদের আধিক্য। যা মেনে নিতে পারছেন না কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপির দুর্দিনের ত্যাগী নেতা কর্মীরা। বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে গত ১৫ বছর যাদের সক্রিয় ভূমিকা ছিলনা তারাই এখন বিএনপির কমিটিতে পদপদবী ভাগিয়ে নিচ্ছেন । গত ১৫ বছর যারা আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির প্রচার প্রচারণায় সক্রিয় ভাবে জড়িত ছিলেন এবং সুবিধা নিয়েছেন, তাদেরকে কিভাবে বিএনপির কমিটিতে জায়গা দিলেন, তা দেখে হতভম্ব হয়েছেন কাঠইর ইউনিয়নের বিএনপির জেল জুলুমের শিকার ত্যাগী ও নিবেদিত নেতাকর্মীরা।

‎

‎জানা যায়, বর্তমান কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আবুল কালাম তিনি বিগত দিনে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে অংশ গ্রহন করেননি। তিনি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপলের প্রত্যেকটি নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সক্রিয় ভাবে আওয়ামীলীগের গুনগান গেয়ে প্রচার প্রচারণার দায়িত্ব পালন করে মানুষের কাছ থেকে ভোট আদায় করে,  বিগত দিনে যুব লীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপলকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিজয়ী করতে সক্রিয় ভাবে ভূমিকা পালন করেছেন। তাছাড়াও কাঠইর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রত্যাকটি মিটিং মিছিলে লোকজন দিয়ে সহযোগিতা করতেন। এখন আওয়ামী সরকার পতনের পর ভোল পাল্টে হয়েছেন কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক।

এছাড়াও বর্তমান কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোসাহিদ মিয়া তিনি বিগত দিনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুটের একজন আস্থা ভাজন কর্মী হিসেবে নিজেকে নিরাপদ রেখে বিএনপিকে তোয়াক্কা না করে  নিজে আর্থিক সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। বর্তমানে পলাতক আওয়ামী নেতাদের সাথে তার যোগ সাজস রয়েছে বলেও জানা যায়।

‎

‎অন্যদিকে বর্তমান কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৫নং ওয়ার্ডের প্রস্তাবিত সভাপতি দাবী করা ছমির উদ্দিন তিনি হচ্ছেন আরেক ছদ্মবেশি, বিগত দিনে যাকে দেখা গেছে কখনো জাতীয় পার্টির মিছিলে আবার কখনো আওয়ামী লীগের মিটিংয়ে সক্রিয় ভাবে স্লোগান দিতে। আওয়ামী সরকার পতনের পর এখন তিনি বিএনপির স্লোগান নিয়ে ব্যস্ত সময় কাঠাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি স্লোগানে স্লোগানে কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রস্তাবিত সভাপতি দাবীদার। ভবিষ্যতে যদি নতুন কোন দল ক্ষমতায় যেতে পারে তবে সেই দলেরও স্লোগান দিতে তাকে দেখা যাবে কিনা সেটাও অনেকেরই প্রশ্ন। সব মিলিয়ে তিনি সব দলের সুবিদাবাদী নেতা হিসেবে মানুষের কাছে ইতিমধ্যে সমাদৃত হয়েছেন।

‎

‎এছাড়াও আরেক যুবলীগের সক্রিয় ঠিকাদার যিনি বর্তমানে কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য রইছ মিয়া, বিগত দিনে যিনি দলের চোখে ধুলো দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে ১৫ বছর নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য ঠিকাদারি ব্যবসায় লিপ্ত ছিলেন, দলের কথা চিন্তা না করে নিজের পকেট ভারি করেছেন আওয়ামী লীগকে অনুসরন করে। বর্তমানে তিনি আওয়ামী নেতাদের সাথে নিয়ে মুখোশের আড়ালে চালিয়ে যাচ্ছেন তার ব্যবসা বানিজ্য। যা নিয়ে এলাকার স্থানীয় লোকজনের মুখে চলছে  আলোচনা সমালোচনা। সব মিলিয়ে দেখা যায় কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অধিকাংশই এখন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং জাতীয় পার্টির সাবেক অনুসারীদের দখলে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সুনামগঞ্জ জেলা কমিটি ও সদর উপজেলা বিএনপি’র  দায়িত্বরত নেতৃবৃন্দ বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের মাধ্যমে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করে বিএনপি থেকে ছদ্মবেশি নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এমনটাই প্রত্যাশা কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের ।

কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, সাবেক ইউনিয়ন বিএনপি’র সহ-সভাপতি, ২০১৬ সালে কাঠইর ইউনিয়ন পরিষদের ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো: কামরুল ইসলাম বলেন, কাঠইর ইউনিয়ন বিএনপি’র কমিটিতে সাবেক আওয়ামী দোসর ও জাতীয় পার্টির লোকজনের ছড়াছড়ি।

এমনকি এর আওতাধীন ওয়ার্ডের আহ্বায়ক কমিটি গুলোতে অসংখ্য আওয়ামীলীগের দোসররা স্থান পেয়েছে এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যারা দায়িত্বে আসতেছে বলে নিশ্চিত করতেছে এদের বেশিরভাগই বিগত সময় গুলোতে আওয়ামীলীগের সাথে প্রকাশ্যে জড়িত ছিল, গ্রুপ ভারী করতে এদের পদায়ন করা হচ্ছে, যার কারণে আমি এই কমিটির মিটিং গুলো বয়কট করে এর প্রতিবাদ করছি।

তিনি আরো বলেন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক (স্বাক্ষর ক্ষমতাপ্রাপ্ত) নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ রইল কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আরো যাচাই বাছাই করে আওয়ামীলীগের দোসর মুক্ত, দু:সময়ের নিবেদিতদের দ্বারা কমিটি দেখতে চাই। আপনারাও বক্তব্যে তাই বলে থাকেন, সেসময় আমরা আশ্বস্ত হই। আমরা কমিটি গঠনের সময়ে এইসব বক্তব্যের সঠিক প্রতিফলন দেখতে চাই। লবিং তদবিরে ব্যস্ত থাকে আওয়ামীলীগের দোসররাই, কারণ এই সময়ে তারা জায়েজ হতে মরিয়া। তাই এদের মন ভোলানো কথা “আমরা আপনাদের গ্রুপ মেন্টেইন করব” এই কথায় ভূলিয়ে যেন তাদের ফায়দা আর হাসিল করতে না পারে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন আশা করি। দিন শেষে এরা দলের দু:সময় আসলে আপনারা ডাকলে মিছিল মিটিংয়ে পাবেন না, এরা যার কাছ থেকে যখন যেভাবে সুবিধা নেয়া যায় সেই মতলবে চলে। আর দিন শেষে দলের নিবেদিত কর্মীরাই দু:সময়ে দলের হাল ধরে রাখতে হবে, সেসময়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বড় দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতারা কোন গ্রুপ- তা দেখে না, তারা তখন দেখে দল ও দলের নেতাদের নির্দেশ।