নিজস্ব প্রতিনিধি ::
ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে আজ (৩ আগস্ট ২০২৫ খ্রী:) রাজধানীর শাহবাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিশাল ছাত্র সমাবেশ। এই সমাবেশে সারা দেশের মতো সুনামগঞ্জ থেকেও যোগ দিয়েছেন ছাত্রদলের শত শত নেতাকর্মী। তবে, এই সমাবেশ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে, যেখানে এক মধ্য বয়সী ব্যক্তি নিজেকে “ছাত্রদলের সেক্রেটারি” হিসেবে পরিচয় দেন। ভিডিওটি ঘিরে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক সাংবাদিক ওই ব্যক্তিকে প্রশ্ন করেন—“আপনি কি ছাত্রদল করেন?” জবাবে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি ছাত্রদল করি।” এরপর প্রশ্ন করা হয়, “আপনি কোন দায়িত্বে আছেন?” তিনি জানান, “আমি বর্তমানে ছাত্রদলের সেক্রেটারি, ধর্মপাশা উপজেলা, সুনামগঞ্জ জেলার ”
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনরা প্রশ্ন তোলেন—৪৫ বছর বয়সে এসেও কেউ কীভাবে ছাত্রদল করতে পারেন? অনেকেই ভিডিওর বক্তব্যকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিডিওতে যাকে দেখা গেছে, তিনি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের গোলকপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার ডাক নাম মন্টু। বয়স প্রায় ৪৫ বছর। স্থানীয়দের অনেকেই জানান, তিনি রাজনীতি করেন কি না, তা তারা জানেন না।
ধর্মপাশা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ওবায়দুর মজুমদার এ বিষয়ে বলেন,
“আমি আজ ঢাকার শাহবাগে ছাত্রদলের সমাবেশে অংশ গ্রহণ করেছি। ভিডিও টি দেখে জানতে পারি, ওই ব্যক্তি আমাদের এলাকারই লোক। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি তাকে চিনি না। ছাত্রদলের কোনো মিটিংয়েও কখনো তাকে দেখিনি। এ বয়সে ছাত্রদল করার প্রশ্নই আসে না। ধারণা করছি, কেউ তাকে শিখিয়ে দিয়েছে এমনটা বলার জন্য। এটি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে একটি কথিত গুপ্ত সংগঠনের কাজ হতে পারে। তারাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।”
ধর্মপাশা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সারোয়ার হোসেন বলেন,
“ভিডিওতে যাকে দেখা গেছে, তিনি ছাত্রদলের কেউ নন। ভুয়া পরিচয় দিয়েছেন। আমরা কেউ তাকে চিনি না। মনে হচ্ছে, আজকের ছাত্র সমাবেশকে কলুষিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এই ভূয়া বক্তব্য দেওয়ানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. তারেক মিয়া বলেন,
“ধর্মপাশা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হিসেবে আছেন ওবায়দুর মজুমদার এবং সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্বে আছেন সারোয়ার হোসেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখে আমি ধর্মপাশা উপজেলার স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা নিশ্চিত করেছেন, ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি কখনও ছাত্রদলের কোনো ইউনিটে সেক্রেটারি ছিলেন না। আর বর্তমানে ছাত্রদলের কোনো দায়িত্বে থাকার তো প্রশ্নই আসে না। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত পাতানো ঘটনা।”